কোন হরমোনের কারণে মেয়েদের দাড়ি গোঁফ গজায়? মেয়েদের মুখে দাঁড়ি উঠার কারণ হলো হরমোন। এই হরমোন গুলো আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই হরমোনের সমস্যার কারণে পুরুষ ও নারীর উভয়ের শরীরে অনেক রোগের সৃষ্টি হতে পারে । সঠিক সময়ে হরমোনের চিকিৎসা করানো গেলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
কোন হরমোনের কারণে মেয়েদের দাড়ি গোঁফ গজায়?
পুরুষদের জন্য দাড়ি গোঁফ যেমন গর্ভের বিষয় তেমনই নারীদের জন্য এটা ততটাই অস্বস্তিকর। অনেক নারীর দেখা যায় গালে বা মুখের উপরের অংশে দাড়ির মত চুল গজাচ্ছে যে কোনও বয়সের মহিলাদের।
বিশেষ করে তরুণী বা কম বয়সি মেয়েদের ক্ষেত্রে তা হয়ে যায়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় মূলত এর জন্য দায়ী। প্রত্যেক নারী এবং পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন নামক এক ধরণের হরমোন রয়েছে। এই টেস্টোস্টেরন হরমোন কে পুরুষ হরমোনও বলা হয়ে থাকে।
পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েদের শরীরেও এই টেস্টোস্টেরন হরমোন সামান্য পরিমাণে থাকে। কিন্তু মেয়েদের শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকলে অথবা হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে মেয়েদের শরীরে পুরুষের মতো অধিক লোম গজাতে থাকে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মেয়েদের এই শারীরিক সমস্যাটি হার সিটিজেন বলা হয়। 70-80 শতাংশ আক্রান্ত নারীর রক্তে অ্যান্ড্রোজেন হরমোন বেশি থাকে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিম্বাশয় এই অতিরিক্ত অ্যান্ডজনের কারণে টিউমার বা ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ অবস্থায় শুধু অতিরিক্ত পুরুষালী লোভী নয়, শরীরে আরও অনেক পরিবর্তনই দেখা যায়। যেমন অতিরিক্ত দুর্গন্ধময় ঘাম, ওজন বৃদ্ধি, ঘাড়ে কালো দাগ ইত্যাদি।
এই সমস্যায় আক্রান্ত অধিকাংশ কিশোরী ঋতুস্রাব স্বাভাবিক থাকে না। যেসব রোগের লক্ষণ হিসেবে মেয়েদের শরীরে এমন অবাঞ্ছিত লোম হতে পারে। সেগুলো হল পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, কন্টিনেন্টাল অ্যান্ড রোল হাইপারপ্লাসিয়া, কুশিং সিনড্রোম, গ্রোথ হরমোনের অতিরিক্ত উপস্থিতি।
কিন্তু হরমোন বিশেষজ্ঞরা আক্রান্ত নারীর উচ্চতা ওজন থেকে শুরু করে অতিরিক্ত লোমের বিস্তার, ঋতুস্রাবের ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে প্রাথমিক ধারণার কথা আপনাদের চিকিৎসককে বলতে হবে।
মেয়েদের মুখে দাড়ি-গোঁফ গজালে তার চিকিৎসা আপনারা বাড়িতে বসে করতে পারবেন। যদি আপনার শরীরে বেশি ওজন থাকে তাহলে কমাতে হবে। ওজন কমানোর জন্য আপনারা নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন। কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেতে পারবেন এবং দাড়ি-গোঁফ ভালো করে ওয়াক্সিং করে নিবেন।
লেজার চিকিৎসা এক্ষেত্রে কয়েকবার চিকিৎসা নিতে হয়। এই পদ্ধতিতে লোমের গোঁড়ায় রশ্মি ফেলা হয় যাতে গোড়া নষ্ট হয়ে যায় এবং নতুন ভাবে গজাতে পারে না। এটা কিছুটা ব্যয়বহুল এবং দক্ষ চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়।
এক্ষেত্রে ইলেকট্রিক মেশিনের সাহায্যে হেয়ার ফলিকল নষ্ট করা হয়। এভাবেই ঘরোয়া যত্ন ওজন কমানো খাদ্যাভ্যাস, লোম অপসারণ এবং চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে আপনি সহজেই মুখের অবাঞ্ছিত লোম থেকে মুক্তি পেতে পারেন।